জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন দলটির সদস্য নীলা ইসরাফিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়ে একাধিক স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। সেসব স্ট্যাটাসে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেছেন। এবার সেই বিষয়ে কথা বলেছেন নীলা ইসরাফিল।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে তিনি এ বিষয়ে ফের একটি পোস্ট দিয়েছেন।
পোস্টে নীলা ইসরাফিল লিখেছেন,‘আমি ইচ্ছাকৃতভাবে কমেন্ট বক্স খোলা রেখেছি। কারণ, আমি কারো বাক স্বাধীনতাকে খর্ব করতে চাইনি। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আপনাদের স্বাধীনতা আমাকে অপমান করার বা সীমা লঙ্ঘনের সুযোগ দেয়। আমি চাইলে আপনাদের ব্লক করতে পারতাম, রিপোর্ট করতে পারতাম এবং আইনি পদক্ষেপেও যেতে পারতাম। কিন্তু আমি সেই পথ গ্রহণ করিনি। তবুও অনেকেই সেই সুযোগ নিয়ে আমাকে ছোট করার চেষ্টা করেছেন।’
তিনি লেখেন, ‘আমাদের দেশের ইতিহাসে অনেক সাহসী নারী এসেছেন যারা নারীর মুক্তি নিয়ে কথা বলেছেন। বেগম রোকেয়া সাহস করে নারীদের শিক্ষার পথ খুলেছিলেন, আফরোজা করিমের মতো নারীরা আজীবন নারী অধিকার ও উন্নয়নের জন্য লড়াই করেছেন।’
‘আমার মতো সাধারণ একজন নীলা, তাদের পথ অনুসরণ করে কথা বলছি। আমিও হয়তো একদিন চুপ হয়ে যাব আর কথা বলব না, সত্য বলা হয়তো আমিও এড়িয়ে যাব। কিন্তু আপনারা কি চিন্তা করেছেন, তারপরে কী হবে?’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমার ধৈর্য ও সহনশীলতাকে ভুল বোঝা যাবে না। সীমালঙ্ঘন কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়, আমি তা মেনে নেব না। আপনারা স্বাধীনভাবে কথা বলুন, কিন্তু সম্মানের সীমানা রক্ষা করুন। কারণ বাক স্বাধীনতা মানে দায়িত্ব এবং সম্মানও বটে।’
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে অভিযোগপত্রে নীলা ইসরাফিল উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পারিবারিক সহিংসতার শিকার হওয়ার পর শারীরিক, মানসিক ও সাংগঠনিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় তিনি সরোয়ার তুষারের কাছ থেকে কিছু মানবিক সহায়তা পেয়েছিলেন। তবে পরে সেই সহযোগিতা ব্যক্তিগত ও অনৈতিক এক সম্পর্কের দিকে ধাবিত করার চেষ্টা করেন সরোয়ার তুষার।
নীলা বলেন, ‘রাতের বেলা ফোন করে কণ্ঠস্বর নিয়ে অশালীন মন্তব্য, ঠোঁট নিয়ে প্রশংসা, ব্যক্তিগত ছবি চাওয়া, ভিডিও কলে কথা বলার চাপ- এসব আমাকে চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে।’
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘তিনি (সরোয়ার তুষার) প্রায়ই রাতের বেলা কল করে বলেন, ‘রাজনীতি নিয়ে কথা ভালো লাগে না, তোমার কণ্ঠে ভালো লাগে প্রতিবাদের স্লোগান’, ‘তোমার ঠোঁট সুন্দর’, ‘একটা সুন্দর ছবি পাঠাও’- এ ধরনের মন্তব্য বারবার আমাকে অস্বস্তি ও অপমানের মধ্যে ফেলেছে।’