জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, সংবিধান নামক যে আওয়ামী বিধান রয়েছে সেটি অনতিবিলম্বে পরিবর্তন করতে হবে। এটিকে সংবিধান বলার কোনো সুযোগ নেই, এটি আওয়ামী বিধান। আর এই আওয়ামী বিধানের কারণেই রাষ্ট্র ফ্যাসিবাদে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রের মতামত ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে, আমাদের নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। গুম, খুন নিপীড়নের রাজনীতি করে বিরোধী দল দমন করা হয়েছে। ভোটের অধিকার হরণ করে রাতের ভোট ও ডামি নির্বাচনের যে সংস্কৃতি চালু করা হয়েছিল সেগুলো থেকে উত্তরণের জন্য এ সংবিধান পরিবর্তের কোনো বিকল্প নেই।
রোববার বিকাল ৫টায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বটতলী মোটর স্টেশনের সিকদার সেন্টারের সামনে এনসিপি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের পরবর্তী বাংলাদেশ হবে অতীতের রাজনীতির অভিজ্ঞতা ও তরুণ প্রজন্মের মনোভাবের সংমিশ্রণে। তরুণদের যদি মাইনাস (বাদ) করার চিন্তা থাকে তাহলে আমরা বলতে চাই- এ আন্দোলনে যত ক্রিয়াশীল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এসে এ ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। আমরা বারবার বলেছি, সবার আগে আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে। যেসব টকশোজীবী ও বুদ্ধিজীবী এখন আওয়ামী লীগের মানবাধিকারের জন্য সরব হয়েছেন, আপনারাই এত দিন ফ্যাসিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন।
তিনি বলেন, আপনারা যদি তরুণ প্রজন্মের কথা বুঝতে ব্যর্থ হন তাহলে আওয়ামী লীগের মতোই আপনাদের পরিণতি হবে। পলিসির জায়গায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে। আবার যখন সংকট আসে, তখন বিভেদ কাটিয়ে উঠে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।
তিনি আরও বলেন, সংস্কার, নতুন সংবিধান, গণপরিষদ ও আইনসভা নির্বাচন এবং আহত ও শহিদ পরিবারে পুনর্বাসন এসব বিষয়কে আমরা গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানিয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করা এই সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে জনগণের যে মতামত রয়েছে, সেগুলো জানার জন্যই আমরা চট্টগ্রাম দক্ষিণের মধ্য দিয়ে পথসভা শুরু করেছি।
এ সময় তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত লোহাগাড়ার সন্তান শহিদ ইশমাম ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক ভারতীয় আগ্রাসনের শিকার হয়ে নির্মমভাবে খুন হওয়া শহিদ সাইফুল ইসলাম আলিফকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্য সচিব মীর আরশাদুল হক, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মো. আতাউল্লাহ, সংগঠক আরমান হোসেন ও আজিজুর রহমান রিজভী, কেন্দ্রীয় সদস্য জোবাইর আলম মানিক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সংগঠক জহির উদ্দীন প্রমুখ।