কয়েক দিন আগে ভারতের নির্বাচন কমিশন বিহার রাজ্যের জন্য সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে। প্রায় এক মাসব্যাপী পর্যালোচনার পর এই তালিকা প্রকাশিত হয়। নভেম্বর মাসে সেখানে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এই তালিকা প্রকাশের পরই দেখা দিয়েছে মহাগোল।
বিরোধী দল ও নির্বাচনসংক্রান্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর অভিযোগ তালিকায় ভুল ছবি ও মৃত ব্যক্তিদের নামও রয়েছে। হাতেনাতে তার প্রমাণ দিয়েছে বিরোধীরা। এছাড়াও মহারাষ্ট্র রাজ্যের পালঘর জেলার নলসোপাড়া বিধানসভা এলাকায় এক নারীর নাম ভোটার তালিকায় ৬ বার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এনডিটিভি।
২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিজেপির টানা তৃতীয়বারের জয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদি। রাহুল অভিযোগ করেছেন, ভোট চুরির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন মোদি। নির্বাচনে অনিয়ম করে ১ লাখের বেশি ভোটার নিবন্ধন করা হয়েছে। এসব ভোটারদের মধ্যে অনেকেই ডুপ্লিকেট। তাদের ঠিকানায়ও ত্র“টি আছে, এমনকি একই ভোটার একাধিক স্থানে নিবন্ধন পাওয়া। রাহুল মহাদেবপুরায় ১৫০ বর্গফুটের এক ঘরে ৮০ জনকে নিবন্ধন দেওয়ার তথ্য প্রকাশ করেছেন।
গত নির্বাচনে কংগ্রেস ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ৯৯টিতে জয় পায়। বিজেপি জেতে ২৪০টিতে। রাহুলের অভিযোগ, ইসির অনিয়মের কারণে তার দল নির্বাচনে কমপক্ষে ৪৮টি আসন হারিয়েছে। অনিয়ম ঢাকতে ইসি ভোট কেন্দ্রের সিসিটিভি ফুটেজও মুছে ফেলেছে।
গান্ধীর সংবাদ সম্মেলনের পর পরই নির্বাচন কমিশন এক্সে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা দাবি করেছে এমন অভিযোগ তোলায় রাহুল গান্ধীকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
ইসির কেরালা কার্যালয় জানিয়েছে, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় কংগ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আপত্তি জমা দেয়নি। আর সিসিটিভির ফুটেজ মুছে ফেলা প্রসঙ্গে বলেছে, ভোটের ফল ঘোষণার পর কেবল ৪৫ দিন পর্যন্ত ফুটেজ সংরক্ষণ করা হয়।
বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রাধান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘এমন বিশৃঙ্খলা তৈরি করাটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এটি গণতন্ত্রের জন্যও বিপদের।’ নির্বাচন কমিশন আরও জানিয়েছে, ২৫ জুন থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত তাদের কর্মকর্তারা রাজ্যের তালিকাভুক্ত ৭৮.৯ মিলিয়ন ভোটারের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের তথ্য যাচাই করেছেন।
কমিশনের মতে, এর আগের এই ধরনের পুনঃনিরীক্ষণ ২০০৩ সালে হয়েছিল এবং এবার আপডেট করা অত্যাবশ্যক ছিল। নতুন এ তালিকায় ৭২.৪ মিলিয়ন ভোটারের নাম রয়েছে, যা আগের তুলনায় ৬.৫ মিলিয়ন কম।
কমিশন জানায়, এই নাম কমার কারণ হচ্ছে ২.২ মিলিয়ন ব্যক্তি মৃত এবং ৭০ লাখ ভোটার একাধিকবার তালিকায় থাকা এবং ৩.৬ মিলিয়ন ভোটার রাজ্য ত্যাগ করেছেন। ভুল ঠিক করার জন্য আবেদন করার সময়সীমা ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে।