একজন সাবেক কাউন্টি ক্রিকেট কোচকে ৯ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ক্রিকেট ডিসিপ্লিন প্যানেল। দুই জন নারী সহকর্মীর প্রতি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ স্বীকার করার পর এই শাস্তি দেয়া হয়।
২০২৩ ও ২০২৪ সালের ঘটনা নিয়ে কোচটি পেশাগত আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাঁচটি অভিযোগ স্বীকার করেছেন। এর মধ্যে একটি ঘটনার সময় তিনি ক্লাবের চেঞ্জিং রুমে এক নারী সহকর্মীকে জোর করে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন।
সিডিপি জানিয়েছে, কোচটির স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং সম্ভাব্য ক্ষতির আশঙ্কার কারণে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। ঘটনার পর তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং এরপর আর ক্রিকেটে কোনো পেশাগত দায়িত্বে তিনি নেই।
নয় মাসের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ছয় মাস আগে থেকেই কার্যকর ধরা হয়েছে। বাকি তিন মাস স্থগিত রাখা হয়েছে আগামী ১২ মাসের জন্য। কারণ, কোচ দায় স্বীকার করেছেন, অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন এবং সংশোধনমূলক শিক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
সিডিপি জানায়, তিনি এক প্রাক্তন পেশাদার ক্রীড়াবিদের সঙ্গে কাজ করেছেন, যিনি তাকে শিখিয়েছেন কীভাবে অপ্রত্যাশিত অশালীন বার্তা কারও ওপর প্রভাব ফেলে। এছাড়াও, তিনি যৌন নিপীড়ন ও পেশাগত সীমারেখা নিয়ে শিক্ষামূলক কোর্সও সম্পন্ন করেছেন।
আদালতে শোনা হয়, তিনি একজন নারী সহকর্মীর সঙ্গে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা চালাচালি করতেন। ওই নারী আপত্তি জানানোর পরও কয়েকদিন পরে আবার একটি অশালীন বার্তা পাঠান তিনি।
অন্য আরেকজন, যিনি বয়সে অনেক ছোট এবং পেশাগতভাবে কোচটির সঙ্গে কাজ করতেন, তাকেও তিনি যৌন উদ্দীপক ছবি পাঠান। ওই নারী কোনো সাড়া দেননি। পরে কোচটি তাকে চেঞ্জিং রুমে পাঠান কাজের বাহানায়। সেখানে গিয়ে তিনি ওই নারীর দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই নারী নিজেকে সরিয়ে নেন।
সিডিপি জানিয়েছে, যদিও ওই কোচ দুটি ঘটনাতেই সরাসরি ‘বিশ্বাসভাজন’ অবস্থানে ছিলেন না, তবুও তিনি বয়সে অনেক বড় এবং ক্লাবে তার পদ অনেক উচ্চতর ছিল। ফলে তাদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য ছিল না।
ক্রিকেট রেগুলেটরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস হাওয়ার্ড বলেন, ‘এই ধরনের যৌন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এগিয়ে এসে রিপোর্ট করেছেন, তাদের সাহস এবং সততার জন্য ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্রিকেট থেকে যৌন নিপীড়ন দূর করাই আমাদের অগ্রাধিকার। আমরা জানি, এগিয়ে এসে এসব অভিযোগ তোলা অনেক সাহসের কাজ।’
সিডিপি জানিয়েছে, প্রথমে তিনি কিছু সীমিত স্বীকারোক্তি দিলেও পরে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে তিনি আগের সেই মানুষ নন যাকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
আদালতে জানানো হয়, তিনি কয়েক মাস ধরে কাউন্সেলিং নিয়েছেন।
রায়ে বলা হয়, ‘তিনি আশা করেন যে এখন তিনি আগের চেয়ে ভালো মানুষ হয়ে উঠছেন। তিনি এখন পেশাগত সীমারেখা, সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার এবং যৌন নিপীড়নের ব্যাপারে ভালোভাবে বুঝতে পারছেন।’