তাহসানের গান ছাড়ার ঘোষণায় যা বললেন তসলিমা নাসরিন

বিনোদন ডেস্ক , মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫






                                        
                                       

দীর্ঘ ২৫ বছরপূর্তির পূর্ব মুহূর্তে সংগীতশিল্পী তাহসান খান আর কখনো গান করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। বিদেশের মাটিতে মঞ্চে দাঁড়িয়ে শেষ গান করার বার্তা জানিয়ে দেন তার ভক্ত-অনুরাগীদের মাঝে।

শুধু গানই নয়; আর কখনো কনসার্ট করবেন না, গান লিখবেন না, সুর করবেন—এমনকি নাটক-সিনেমাতেও অভিনয় করবেন না বলে জানিয়েছেন এ সংগীতশিল্পী। সবকিছু থেকেই তিনি দূরে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার এ সিদ্ধান্তে পালটা খোঁচা দিলেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

এ মুহূর্তে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী তাহসান খান অস্ট্রেলিয়া ট্যুরে রয়েছেন। গত রোববার সন্ধ্যায় মেলবোর্নে একটি কনসার্টে তিনি বলেন, এটাই তার শেষ ট্যুর। এরপর থেকেই শুরু হয় চর্চা। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমকে বলেই গান ছাড়ছেন তিনি। মেয়ে বড় হচ্ছে, তার কথা ভেবে মঞ্চে দাঁড়িয়ে আর লাফালাফি করা যায় না—এমন সব কথাও বলেন তাহসান খান।

তিনি বলেন, সারাজীবন কি এভাবে মঞ্চে দাঁড়িয়ে লাফালাফি করা যায়! এখন যদি মঞ্চে দাঁড়িয়ে গাই— দূরে তুমি দাঁড়িয়ে, দেখতে কেমন লাগে?

প্রিয় শিল্পীর মুখে এমন কথা শুনে দর্শকরা একসঙ্গে বলে উঠেন— ‘না, না।’ যদিও গায়ক জানিয়েছেন, তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন। এরপরেই এ সংগীতশিল্পীকে লক্ষ্য করে প্রশ্ন করেন তসলিমা নাসরিন।

সামাজিক মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন— দাড়ি রেখে বুঝি স্টেজে গান গাওয়া নিষেধ? মেয়ে বড় হলে বুঝি গান গাওয়া নিষেধ?

এ নির্বাসিত লেখিকা বলেন, লাফালাফি করতে ইচ্ছে না হলে লাফালাফি না করেও গান গাওয়া যায়। আমি তো জানি— একমাত্র গান গাইতে না পারলেই স্টেজে গান গাওয়া উচিত নয়। তাহসান তো এখনো গান গাইতে পারেন। তাহসানের দাড়ি কি ইসলামি দাড়ি? ইসলামি দাড়ি হলে না হয় বুঝতাম— ইসলাম ব্যবসায়ীদের ফতোয়া মেনে গান ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি।

বাংলাদেশে নাকি জিহাদি জঙ্গিরা গান গাওয়ার বিপক্ষে। সেই জায়গায় প্রতিবাদ করার বদলে তাহসান খান গান ছাড়ার কথা বলছেন। তসলিমা বলেন, দেশে যখন গানবাজনা বন্ধ করার জন্য জিহাদি জঙ্গিরা ওঠেপড়ে লেগেছে, তিনি তখন গানবাজনার পক্ষে না দাঁড়িয়ে তা ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে কথা বলছেন।

এ লেখিকা বলেন, তাহসান জিহাদির মতোই কথা বললেন। যারা বাউল উৎসব বন্ধ করছে, লালন মেলা বন্ধ করছে, স্কুলে গানের শিক্ষক বন্ধ করছে, গানবাজনার মাজার পুড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি কি গানবাজনার বিরুদ্ধে ওদের জিহাদ ঘোষণায় সায় দিয়েছেন? তা না হলে তার কোনো প্রতিবাদ দেখিনি কেন? কোনো উত্তর নেই তাহসান খানের।

উল্লেখ্য, বাংলা রক গানে জোয়ার এনেছিল ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক’। ১৯৯৮ সালে তিন বন্ধু— জন কবির, জাহান ও টনির হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় এ ব্যান্ডের। পরে এই ব্যান্ডে যোগ দেন তাহসান খান। ২০০২ সালে বাজারে আসে তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘আমার পৃথিবী’। এ অ্যালবামের গান ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয় বাংলাদেশের তরুণ শ্রোতাদের মাঝে। এর পর বহু গান গেয়েছেন, সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন। সম্প্রতি ‘দাগী’ সিনেমায় তার গাওয়া ‘একটুখানি মন’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় দর্শকমহলে।

  • তাহসান খান