ট্রেলার ট্রাকের ধাক্কায় ধসে পড়া দেয়াল চাপা পড়ে স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবদেক , বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫






                                        
                                       

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় ট্রেলার ট্রাকের ধাক্কায় ধসে পড়া দেয়াল চাপা পড়ে এক স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও এক শিশু। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার জামালদি এলাকায় মালবাহী ট্রাকের ধাক্কায় দেয়াল ধসে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. সারাফাত (৬)। সে উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের জামালদি গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে। আহত আরেক শিক্ষার্থীর নাম জামিয়া আক্তার (৬)। সে একই গ্রামের বিল্লাহ হোসেনের মেয়ে। সম্পর্কে সারাফাত এবং জামিয়া চাচাতো ভাই-বোন। তারা দুজন স্থানীয় হাজি সিরাজুল হক স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ সকালে স্কুল থেকে বাসায় ফিরে প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিল সারাফাত ও জামিয়া। বেলা ১১টার দিকে জামালদি গ্রামে তাদের স্কুলের কাছে জামালদি-হোসেন্দী সড়কে আসে তারা। ওই সড়ক ধরে স্থানীয় সামুদা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালবাহী ট্রেলার ট্রাক জামালদি বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিল। গাড়ি দেখে সারাফাত ও জামিয়া সড়কের পাশের দেয়ালের দিকে সরে যায়। ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই দেয়ালে ধাক্কা দেয়। এতে ওই দুই শিশুর ওপর দেয়াল ধসে পড়ে। এ সময় আশপাশ থেকে লোকজন ছুটে এসে শিশুদের উদ্ধার করে গজারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। আহত শিশুদের মধ্যে সারাফাতের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বিকেল পৌনে চারটার দিকে তার মৃত্যু হয়।

সারাফাতের চাচা আলী হোসেন বলেন, ‘ওরা বাঁচার জন্য সড়কের এক পাশে চেপে দাঁড়িয়েছিল। এরপরও ট্রাক চাপা দিয়ে তাদের হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।’

দুর্ঘটনার পর সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় তাঁরা দিনের বেলা এই সড়ক দিয়ে মালবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধের দাবিতে যান চলাচল বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা ওই ট্রাক ও একটি প্রাইভেট কার ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান গজারিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাঁদের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা সড়ক থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরে যান।

এ বিষয়ে সামুদা কোম্পানি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে স্থানীয় সাংবাদিকেরা সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেননি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এক কর্মকর্তা এসে জানান, ট্রাকটির মালিক তাঁরা নন। তাঁরা একটি এজেন্সি থেকে গাড়ি ভাড়া করে আনেন। গাড়িসংক্রান্ত বিষয়ের দায়ভার ওই এজেন্সির।

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার আলম আজাদ আজ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পাওয়ামাত্র ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। ওই ট্রাকটি স্থানীয় লোকজন আটক করেছে। আমরা তা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

  • গজারিয়া
  • দুর্ঘটনা
  • মুন্সিগঞ্জ
  • মৃত্যু