গাজা-বিশ্বের বুকে এমন এক স্থান যেখান থেকে বেরোনোর কোনো পথ নেই। অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে বছরের পর বছর ইসরাইলি আগ্রাসন সহ্য করছে ফিলিস্তিনিরা। ফলে গাজাকে একটি মৃত্যু খাঁচার সঙ্গে তুলনা করেছেন সেখানে কর্তব্যরত এক মার্কিন চিকিৎসক আহমাদ ইউসুফ।
এই শিশু বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এটি একটি খাঁচা যেখানে মানুষকে মৃত্যুর জন্য চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রায়ই মনে হয় একটি নির্দিষ্ট দিনে কতজন মানুষকে হত্যা করা উচিত তার জন্য একটি কোটা রয়েছে।’ আল-জাজিরা।
গাজায় নিজের কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বেশকিছু কথা বলেন আহমাদ ইউসুফ। তিনি আড়াই সপ্তাহ ধরে কেন্দ্রীয় দেইর এল-বালাহের আল-আকসা হাসপাতাল এবং গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে কাজ করেছিলেন।
সম্প্রতি ত্রাণকেন্দ্রে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি অত্যাচারে বেশকিছু নমুনা লক্ষ্য করেছেন তিনি। ইউসুফ জানান-গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত সাইটগুলোতে ত্রাণপ্রার্থীদের আঘাত দেখে বোঝা যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট শরীরের অংশগুলোকে লক্ষ্য করছে। প্রতিদিন আঘাতের চিহ্ন ভিন্ন হয়।
তিনি বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট দিনে, ধরুন সোমবার, আমরা একটি নির্দিষ্ট সময়ে ৪০-৬০ জন রোগী পেতাম। দেখা যেত তাদের সবাইকে পায়ে, অথবা শ্রেণী অঞ্চলে, অথবা কুঁচকিতে গুলি করা হতো। ঠিক একই ধরনের প্যাটার্নে। পরের দিন, আমরা উপরের শরীরের, বুকে, বক্ষে গুলি দেখতে পেতাম এবং তারপরে এমন দিন ছিল যখন আমরা কেবল মাথার ক্ষত, উপরের ঘাড়ের গুলির ক্ষত দেখতে পেতাম। বিষয়টা এমন লাগছিল… তারা আগেই সিদ্ধান্ত নিত সেদিন তারা মানুষকে পঙ্গু করবে নাকি হত্যা করবে।’
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, মে মাসের শেষের দিকে জিএইচএফের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ১,৮৩৮ জন ফিলিস্তিনি ত্রাণপ্রার্থী নিহত হয়েছেন এবং আরও ১৩,৪০৯ জন আহত হয়েছেন।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স, গত সপ্তাহে বলেছে দুর্ভিক্ষপীড়িত গাজায় জিএইচএফ পরিচালিত খাদ্য বিতরণ ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং অমানবিকীকরণের’ দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করছে।
অন্যদিকে মানবাধিকারসংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে গুলি চালানো আন্তর্জাতিক আইন এবং যুদ্ধাপরাধের গুরুতর লঙ্ঘনের সমান।