একসঙ্গে কয়টি কোয়েলের ডিম খাওয়া নিরাপদ?

নিজস্ব প্রতিবেদক , শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫






                                        
                                       

আকারে বেশ ছোট হওয়ায় কেউ কেউ একসঙ্গে বেশ কয়েকটি কোয়েল পাখির ডিম খেয়ে ফেলেন। তবে কোয়েলের ডিম একসঙ্গে কয়টি খাওয়া ভালো বা বেশি খেলে আদৌ কোনো ক্ষতি হবে কি না, তা অনেকেরই অজানা।

সাধারণত একটি মুরগির ডিমে (৫০ থেকে ৬০ গ্রাম) ৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে। অন্যদিকে একটি কোয়েল পাখির ডিমে (৯ থেকে ১০ গ্রাম) প্রোটিনের পরিমাণ ১ দশমিক ২ গ্রাম। আকারে ছোট হলেও ওজন অনুপাতে কোয়েল পাখির ডিমের প্রোটিনের ঘনত্ব মুরগির ডিমের প্রায় কাছাকাছি।

এ ছাড়া কোয়েলের ডিমে ভিটামিন এ, বি, আয়রন, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও অ্যান্টি–অ্যাক্সিডেন্ট থাকে প্রচুর। এই ডিম আমাদের শরীরে ফ্রি রেডিক্যালের নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনে এবং তাতে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায় আমাদের শরীরের কোষ। কোয়েল পাখির ডিমের ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) রক্তনালির সুরক্ষায় সহায়ক। এটি খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমিয়ে হৃদযন্ত্রের ঝুঁকি হ্রাস করে। প্রচুর আয়রন থাকায় হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। এই ডিম সহজে হজমও হয়।

একসঙ্গে কয়টি কোয়েলের ডিম খাওয়া ভালো

একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তি দিনে ৩ থেকে ৫টি কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারবেন। তবে প্রতিদিন না খেয়ে সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন খেলে ভালো। যদি উচ্চ কোলেস্টেরল বা হৃদ্‌রোগের সমস্যা থাকে, তাহলে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে কোয়েলের ডিম খেতে হবে। শিশুর বয়স যদি ১ থেকে ৩ বছর হয়, তাহলে ১ থেকে ২টি কোয়েল পাখির ডিম দেওয়া যেতে পারে।

তবে শুরুতে অল্প পরিমাণ দিয়ে অ্যালার্জি আছে কি না, তা বুঝে নিতে হবে। বয়স ৫ থেকে ১০ বছর হলে শিশুকে ৩টি ডিম দিতে পারেন। অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী মায়েরা ২ থেকে ৩টি খেতে পারেন। এর বেশি ডিম একসঙ্গে না খাওয়াই ভালো।

কোয়েলের ডিমের কাঁচা সাদা অংশে ‘অ্যাভিডিন’ নামক প্রোটিন থাকে, যা শরীরে বায়োটিন (ভিটামিন বি৭) শোষণে বাধা দেয়ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

অতিরিক্ত খেলে যা হতে পারে

১. কোলেস্টেরল বৃদ্ধি: দিনে ৩ থেকে ৪টির বেশি কোয়েলের ডিম খেলে রক্তে কোলেস্টেরল বাড়তে পারে, যা হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

২. কিডনির ওপর চাপ: যাঁদের কিডনি রোগ আছে, তাঁরা অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

৩. অ্যালার্জি: ডিম খেলে যাঁদের অ্যালার্জি হয়, তাঁদের কোয়েলের ডিম খেলে অ্যালার্জি বেড়ে যেতে পারে।

৪. পেটের সমস্যা: অতিরিক্ত খেলে বদহজম ও গ্যাস হতে পারে; কারও কারও পেট ফাঁপে।

৫. বায়োটিনের ঘাটতি: কোয়েলের ডিমের কাঁচা সাদা অংশে ‘অ্যাভিডিন’ নামক প্রোটিন থাকে, যা শরীরে বায়োটিন (ভিটামিন বি৭) শোষণে বাধা দেয়। তবে ঠিকমতো রান্না করলে এটা কমে যায়। তা ছাড়া, এতে সালামনেলা ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। তাই কাঁচা বা আধা সেদ্ধ কোয়েলের ডিম খাবেন না।

  • কোয়েলের ডিম
  • কোলেস্টে