যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স ৬ বা এমআই ৬- প্রথমবারের মতো একজন নারীকে প্রধান করতে যাচ্ছে। চলতি বছরের শেষের দিকে সংস্থাটির বর্তমান প্রধান রিচার্ড মুরের স্থলাভিষিক্ত হবেন ব্লেইস মেট্রেওয়েইলি নামের ওই নারী। এমআই ৬-এর ১১৬ বছরের ইতিহাসে যা এই প্রথম ঘটতে যাচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, ব্লেইস মেট্রেওয়েইলি ১৯৯৯ সাল থেকে ব্রিটিশ সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসে কর্মরত। বর্তমানে তিনি সংস্থাটির প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এমআই ৬-এর প্রধান হিসেবে ব্লেইসের নিয়োগকে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তিনি বলেছেন, যখন গোয়েন্দা সংস্থার কাজ স্মরণকালের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তখন এমন একটি সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক।

আরও পড়ুন: পেরুতে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প, ১ জনের মৃত্যু

ব্লেইস ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃতত্ত্ব বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। এমআই ৬-এর আগে তিনি এমআই৫-এর পরিচালক পর্যায়ের পদে কাজ করেছেন। কাজের জন্যই তার পেশাজীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে। ২০২৪ সালের রাজকীয় সম্মানসূচক তালিকায় (কিংস ওভারসিস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল বার্থডে অনার লিস্ট) তাকে যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক নীতিতে অবদানের জন্য সিএমজি (কম্প্যানিয়ন অব দ্য অর্ডার অব সেইন্ট মাইকেল অ্যান্ড সেইন্ট জর্জ) উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

এমআই ৫-এ কর্মরত অবস্থায় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, ‘ডিরেক্টর কে’ ছদ্মনামে ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য টেলিগ্রামকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্লেইস বলেছিলেন, ‘যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তার হুমকিগুলো সত্যিই বহুমুখী। সরকারের সুরক্ষা, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষা, নাগরিকদের নিরাপত্তা, অর্থনীতি, প্রযুক্তি ও জ্ঞান সংরক্ষণ—সবই এখন হুমকির মুখে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশ হিসেবে রাশিয়া নয়, রাশিয়ার রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত তৎপরতা এখনো হুমকি। আর চীন এমনভাবে বিশ্বব্যবস্থাকে বদলে দিচ্ছে, যা যুক্তরাজ্যের জন্য যেমন সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে দিচ্ছে, তেমনই নানা ধরনের ঝুঁকিও তৈরি করছে।’

এমআই ৫ যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলোর দেখভাল করে। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের বাইরের দেশগুলোতে গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় এমআই৬। এমআই ৬-এর ১৮ তম প্রধান হতে যাচ্ছেন ব্লেইস। এমআই ৬-এর প্রধানকে সাধারণত ‘সি’ (c) বলে ডাকা হয়। এই ‘সি’ই সংস্থাটির একমাত্র ব্যক্তি যাকে সংস্থার বাইরের লোকেরা চেনে। এ ছাড়া বাকি সবার পরিচয় গোপন রাখা হয়।