দখলদার ইসরাইলি সেনাবাহিনী অবরুদ্ধ ও বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় তাদের হামলার মাত্রা তীব্র করেছে। এতে গত ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ৩০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইসরাইলের সর্বশেষ আক্রমণের অংশ হিসেবে শুধু গত ২৪ ঘণ্টাতেই প্রায় ১৫০ জন নিহত হয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ১৫৩ জনের লাশ গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে পৌঁছেছে। এর মধ্যে সাতজনের লাশ পূর্বের হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। একই সময়ে আরও ৪৫৯ জন আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৩,২৭২ জন নিহত এবং ১,২০,৬৭৩ জন আহত হয়েছেন।
এই মৃত্যু ও ধ্বংসের মাত্রা ইসরাইলের নতুন সামরিক অভিযানের প্রাথমিক পর্যায়েই কতটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে।
দীর্ঘ ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরাইল।
কিন্তু দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের অভিযান শুরু করে দখলদার বাহিনী। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত প্রায় দুই মাসে নিহত হয়েছেন ৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ৮,৪৭৩ জন।
অন্যদিকে হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে এখনো অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল। যার প্রেক্ষিতে গাজায় এখন আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়েছে দখলদার বাহিনী।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করাই এ অভিযানের লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত গাজায় অভিযান চলবে।